আউটসোর্সিং কী? জেনে নাও আউটসোর্সিং এর আদ্যোপান্ত!

একটা গল্প দিয়ে শুরু করি। গল্পের মাধ্যমে আউটসোর্সিং আসলে কী তা জানার চেষ্টা করবো!!!

বছর দশেক আগে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পড়তে শখের বশে পোশাক ডিজাইনিং শুরু করেছিলেন বিজয় চাকমা। নিজস্ব শেকড়ের ঐতিহ্যের সাথে মডার্ন আর্ট মিশিয়ে পোশাক ডিজাইন করতেন তিনি। জনপ্রিয়তার হাত ধরে আজিজ মার্কেটে সাতজন কর্মচারীর একটা দোকান দিয়েছেন সম্প্রতি।

শুভাকাঙ্ক্ষীরা খুব করে বলেন, প্রযুক্তির এই যুগে একটা ওয়েবসাইট না থাকলেই নয়। বিজয় খোঁজখবর নিয়ে একজন ওয়েব ডেভেলপার নিযুক্ত করলেন। দক্ষ ডেভেলপার কয়েকদিনের মাঝে ঝকঝকে একটা ওয়েবসাইট তৈরী করে দিলেন বিজয়ের ব্র্যান্ডের। এর পরেই শুরু হলো আসল খেলা। সুন্দর ওয়েবসাইটটা দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেল। ইন্টারনেটে বিজয়ের পোশাক অনেক মানুষ পছন্দ করলো। ব্যবসা নতুন গতি পেল। বিজয় ভাবলেন, ওয়েব ডেভেলপার হায়ার করে কী ভালো কাজটাই না  করেছিলাম!

নিজের প্রতিষ্ঠানের এই ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজটি বিজয় কিংবা তার কর্মচারীদের কেউ করতে পারতেননা। প্রতিষ্ঠানের বাইরের একজনের মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করিয়ে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিজয় যেটি করেছেন, সেটি হলো আউটসোর্সিং।

কী, গল্পে গল্পে আউটসোর্সিং ব্যপারটা একটু হলেও বোঝা গেল তো? আজকে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আউটসোর্সিং কি থেকে শুরু করে -এর একদম আদ্যোপান্ত জেনে নেয়া। আউটসোর্সিং নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা, আউটসোর্সিং এর গুরুত্ব, সুবিধা-অসুবিধা, প্রকারভেদ, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং কীভাবে আউটসোর্সিং করবো – কিছুই বাদ যাবেনা এই লেখায়।

গল্প শেষ বলে দৌড় দিওনা আবার! ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়ে নাও একবার। আমি এইটুকু কথা দিতেই পারি, আউটসোর্সিং নিয়ে সম্যক একটা ধারণা পেয়ে যাবে এই লেখাটা পড়ে।

আউটসোর্সিং শব্দটি এসেছে আউটসাইড আর রিসোর্সিং এই দুই শব্দের মিশেলে। অর্থাৎ বাইরে থেকে রিসোর্স এনে ব্যবহার করা। এটি মূলত এক বিশেষ বিজনেস স্ট্র্যাটেজি যার দ্বারা কোনো কোম্পানি তাদের কোনো কাজ নিজেদের কলেবরের বাইরের কোনো সোর্স থেকে  করিয়ে নেয়। আইবিএমের মতে, আউটসোর্সিং এর এই ধারণাটা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে, এরপর থেকে পুরো ৯০ এর দশক জুড়েই এটি ব্যবহৃত হতে থাকে। আর বর্তমানে আউটসোর্সিং অনেক বেশি প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটা বিজনেস স্ট্র্যাটেজি।

Picture: Outsourcing

আউটসোর্সিং নিয়ে অনেক প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা আছে। অনেকে ফ্রিল্যান্সিং আর আউটসোর্সিং কে গুলিয়ে ফেলেন। অথচ আউটসোর্সিং আর ফ্রিল্যান্সিং একটা আরেকটার বিপরীত। বলা যায়, পয়সার এপিঠ-ওপিঠ। উপরের বিজয় চাকমার উদাহারণ আবার টেনে আনা যাক। তিনি তার একটা কাজ বাইরের একজন দক্ষ ব্যক্তির থেকে করে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি যেটা করেছেন সেটা আউটসোর্সিং। আর যেই ডেভেলপার বিজয়ের ওয়েবসাইটটি চুক্তির ভিত্তিতে তৈরী করে দিয়েছেন, তিনি একজন ফ্রিল্যান্সার।

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্মটাই হয়েছে আউটসোর্সিং থেকে। ধরা যাক, একটা কোম্পানি সাবান তৈরী এবং বিক্রি করে। তাদের সাবানের মোড়ক তৈরী করার জন্য একজন ডিজাইনার প্রয়োজন। এখন, তাদের সাবানের মোড়ক তো রোজরোজ পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়না। তাই স্থায়ী ডিজাইনার পদের চাকুরি রাখাটা তাদের জন্য লাভজনক হবেনা। তারা তখন কী করবে? আউটসোর্সিং করবে। একজন বা একদল ডিজাইনার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগ করে চুক্তির ভিত্তিতে তাদের কাজটি করিয়ে নিবে। আর তাদের এই চুক্তির ভিত্তিতেই জন্ম হয়েছে ফ্রিল্যান্সিং পেশার।

ফ্রিল্যান্সার তখনই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন, যখন আউটসোর্সিং এর নিমিত্তে তাকে একটা প্রতিষ্ঠান ভাড়া করবে। যদি কোনো কোম্পানীর আউটসোর্সিং এর প্রয়োজন না থাকতো, ফ্রিল্যান্সিং পেশার অস্তিত্বও থাকতোনা।

আউটসোর্সিং এর প্রচলিত অনেক ধরণের মাঝে সবচাইতে জনপ্রিয় ধরণ হচ্ছে অফশোরিং। বর্তমান পৃথিবীতে আউটসোর্সিং বললেই আমরা মূলত এই অফশোর আউটসোর্সিং এর কথা বুঝি।

অফশোরিং এ একটি অফিস বা কোম্পানির কাজ থার্ড পার্টির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, এবং এই থার্ড পার্টি হতে পারে পৃথিবীর অন্য যে-কোনো প্রান্তের। উদাহারণস্বরুপ, একটা কোম্পানী তাদের একটা নির্দিষ্ট উইং (ধরা যাক সেটা মার্কেটিং) এর সম্পূর্ন কাজ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের একটা অন্য দক্ষ টিম/ব্যক্তির দ্বারা পরিচালনা করিয়ে নিতে পারে।

ধরা যাক কোনো একটি কোম্পানীর এমন একটি বিষয় সামাল দিতে হবে, যেটা আশেপাশের মানুষের থেকে অন্য কারো দ্বারা করিয়ে নেয়া বেশি সুবিধাজনক। এক্ষেত্রে কোম্পানীটি কাজটি সামাল দেয়ার জন্য অফশোরিং করে একটা সম্পূর্ণ সেটাপ হায়ার করবে। আর এই হায়ার করা হবে সম্পূর্ণ অন্য একটি দেশ থেকে। আবার, নরওয়ের সাইমন ইলেক্ট্রিক ইন্ডাস্ট্রিজ এর নতুন মডেলের রুম হিটার ডিজাইন করা লাগবে। গোলার্ধের এপাশে কাশ্মীরের মাকসুদা-বিন এবং তার সহকর্মীদের ওপর কাজটার দায়িত্ব দেয়া হলো। সাইমন ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে এটা হবে অফশোর আউটসোর্সিং। 

ইনশোর আউটসোর্সিং বলতে বোঝায় একটা নির্দিষ্ট ভৌগলিক বা রাজনৈতিক সীমারেখার মাঝেই যখন আউটসোর্সার কর্মী নির্বাচন করেন। যেমন ধরা যাক ভারতের একটা এনজিও ভারতের প্রতিটি প্রদেশে মানুষের খাদ্যাভ্যাস গবেষণা করছে। এনজিওটির পক্ষে ভারতের প্রতিটি প্রদেশ ঘুরে ঘুরে গবেষণা চালানো সম্ভব না।

এক্ষেত্রে এনজিওটি প্রতিটি প্রদেশ থেকে সেই প্রদেশেরই দক্ষ একদল লোক নিয়োগ করবে, যারা সেই প্রদেশের অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের থেকে বেশি ভালো বোঝেন। এক্ষেত্রে যেটা হবে,  অনেক কম সময়ে অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে যাবে। আর পাশাপাশি এক প্রদেশ থেকে আরেক প্রদেশে ভ্রমণের বিশাল খরচ বেঁচে যাবে।

বর্তমানে নেয়ারশোর আউটসোর্সিং ও বেশ জনপ্রিয়। নেয়ারশোর আউটসোর্সিং এর অর্থ কী হতে পারে এতক্ষণে নিশ্চয়ই ধরে ফেলেছো? নেয়ারশোর আউটসোর্সিং হচ্ছে, একটা দেশের প্রতিবেশী দেশ থেকে আউটসোর্সিং করা। সৌদি আরবের মরুভূমিতে একটা দালান বানানোর ডিজাইন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নেয়ারশোর আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ইয়েমেনের এক আর্কিটেক্ট দালানের নকশা করে দিলেন।

ইয়েমেনেও অনেক মরু অঞ্চল থাকায় আর্কিটেক্ট এর কাজটা করতে বেশি বেগ পেতে হলোনা। হয়তো জাপানের একজন নকশা করলে যত দিক বিবেচনা করতেন, ইয়েমেনের ডিজাইনার তার থেকে বেশি বিবেচনায় এনে, একটা অপেক্ষাকৃত ভালো ডিজাইন এনে দিতে পারবেন। এটা তো গেল একটা ছোট্ট উদাহারণ। এমন অনেক কারণেই নেয়ারশোর আউটসোর্সিং অনেক গুরুত্বসহকারে করা হয়।

ঠিকমত কাজে লাগানো গেলে আউটসোর্সিং কোনো ব্যবসাকে বিপুল পরিমাণে বাড়তে সাহায্য করতে পারে, যেমনটা উদাহারণ দিয়েছি বিজয় চাকমাকে দিয়ে। আবার এর আবার ভুল ব্যবহার হতে পারে ক্ষতির কারণ। তাই ক্ষতি এড়াতে শুধু নিজের ব্যবসার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই নয়, আউটসোর্সিংকে আমরা দেখবো টেবিলের অপর দিক থেকেও।

ভেবে-চিন্তে আউটসোর্স করলে সাধারণের চেয়ে অনেক কম খরচে একই সার্ভিস পাওয়া যায়। যেমন, আমেরিকা বা ইয়োরোপের একজন কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারের বেতন আর বাংলাদেশ বা এশিয়ার কোনো দেশের ইঞ্জিনিয়ারের থেকে অনেক বেশি, যদিও তারা প্রায় সমান দক্ষ হন। এর কারণ আমেরিকার একটা শহরে বসবাস করা একটা এশীয় দেশে বসবাস করার থেকে অনেক বেশি ব্যয়বহুল।  তাই বেশি উন্নত দেশগুলো তাদের কাজগুলো আমাদের মত স্বল্পোন্নত দেশের লোকবল দিয়ে তুলনামূলক কম খরচে করিয়ে নিতে পারে। 

৯টা-৫টা অফিস করার ঝক্কি ঝামেলা নেই, ক্ষেত্রবিশেষে চাকরিজীবী তার ঘরে বসেই কাজ করতে পারেন। আর চাপমুক্ত পরিবেশের কাজ যে স্বাভাবিকের থেকে বেশি নিখুঁত হবে, এটাই তো স্বাভাবিক।  কাজের দক্ষতা থাকলে স্থান-কাল যে সমস্যা হয় না সেটির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো আউটসোর্সিং।

পাশাপাশি আউটসোর্সাররা তাদের কাজের প্রয়োজনমতো সুনির্দিষ্ট দক্ষ লোকদেরকেই হায়ার করতে পারে। যাচাই-বাছাই করাটাও বেশি সময়সাপেক্ষ না। এখানে একটা উইন উইন সিচুয়েশন তৈরী হয়, ফলে কাজের মান স্বভাবতই উন্নত হয়। 

যেহেতু আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের বিশেষ একেকটা অংশ বাইরের একেক জায়গা থেকে করিয়ে নেয়, তাই তাদের কাজ করে দেয়া ফ্রিল্যান্সাররাও খুব দায়িত্ব নিয়ে নির্দিষ্ট কাজটি শেষ করে। ওই ছোট অংশেই ফ্রিল্যান্সারের অনেক বেশি দক্ষতা থাকা, আর শুধু ওইটুকুতে মনোযোগ দেবার কারণে কাজটি সুন্দর হয়।

একটা নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ একজন ফ্রিল্যান্সারের ওই কাজের জন্য বিশেষায়িত একটা সেটাপ থাকে। নিজের কাছে থাকা প্রযুক্তি দিয়েই ফ্রিল্যান্সার কাজটি করে থাকেন। ফলে আউটসোর্সারের আলাদা করে প্রযুক্তি কেনার জন্য খরচ করতে হয়না, ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তুলতে হয় না।

যেহেতু বাইরে থেকেই অনলাইনেই ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করতে পারেন, তাই মেইন্টেইনেন্স খরচও বাঁচে। সাথে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে কাজ করতে করতে দুইপক্ষই বিভিন্ন প্রযুক্তির সংস্পর্শে আস,  প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নত হয়। 

আলাদা টাইম জোনে থাকলে আমরা শুধু ভাবি অসুবিধা হয়, কিন্তু অপরদিকে সুবিধাও কিন্তু আছে! যেমন, আউটসোর্সার  কোম্পানি তার ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দিয়ে অফিস শেষ করলো, এবং পরদিন সকালে এসেই হয়তো দেখলো কাজ একদম রেডি! কারণ যাকে কাজটি দেয়া হয়েছে, তার টাইম জোনে কাজ করার জন্য উপযুক্ত সময় তখন, যখন আউটসোর্সার ঘুমাচ্ছে। মজার ব্যপার না? প্রচলিত অফিসের ধারায় এমনটা সম্ভব নয়। এতে কাজের গতি যেমন বাড়লো, স্কেল আপও হলো! 

  • অনেকসময় দূরবর্তী যোগাযোগের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। কমিউনিকেশন গ্যাপ দেখা যায়। 
  • কখনও বা নিরাপত্তা ইস্যু দেখা যায়, কারণ সব ফ্রিল্যান্সার সমান নীতিবান নাও হতে পারেন। সিকিউরিটি ব্রিচ করা বেশ বড় একটা সমস্যা কোম্পানিগুলোর জন্য। 
  • যারা আউটসোর্স করছেন, তারা যে সবসময় একদম টপ নচ কোয়ালিটির সার্ভিস দিবেন, সেটিও অনেকসময় নিশ্চিত হয় না।
  • কিছু লুকায়িত খরচ থাকে, যেটা এই প্রসেস চালানোর জন্য প্রয়োজন পড়ে। যেটা বাইরে থেকে দেখা যায় না, কিন্তু দিনকে দিন বাড়তে পারে। 

গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কাস্টমার সার্ভিস, কপিরাইটিং, ডিজাইন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং, মার্কেটিং ও সেলস, অ্যাকাউন্টিং এবং বুককিপিং সহ অগণিত কাজ করা হয় প্রচলিত আউটসোর্সিং এ।

আউটসোর্সিংকে আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকভাগে বিভক্ত করা হয়:

এক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের কিছু কাজ বাইরে থেকে করিয়ে নেয়া হয়। উদাহরণস্বরুপ, কিছু অটোমোটিভ কোম্পানি তাদের প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ও মেইন্টেনেন্স এর কাজ করিয়ে থাকে। 

কিছু কোম্পানি চায়ই তাদের এক্সটারনাল আইটি সাপোর্ট থাকুক, সেক্ষেত্রে তারা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, টেলিকমিউনিকেশনস, টেকনিক্যাল সাপোর্ট এজাতীয় কাজ আউটসোর্স করায়।  

এর মাঝে পড়ে বুক কিপিং, ডেটা এন্ট্রি, মার্কেট রিসার্চ, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রিসার্চ, কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইত্যাদি বিষয়। কেউ চাইলে এগুলোও আউটসোর্স করতে পারে। 

সব কোম্পানিরই কিন্তু ল-ইয়ার থাকে না, কিন্তু লিগ্যাল কাজবাজ তো সকলেরই দরকার। এখানেই কাজে দেয় আমাদের আউটসোর্সিং নামক জাদুর বাক্স। 

কোনো প্রতিষ্ঠানে লোক নিতে দক্ষ জনবল প্রয়োজন, যারা কিনা সুচারুভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবে। কোনো স্বজনপ্রীতি ছাড়াই সুন্দর ভাবে পুরোটা ম্যানেজ করতেও লোকবল আউটসোর্স করা হয়ে থাকে। 

যেকোনো প্রতিষ্ঠান নির্বিঘ্নে ছলতে হলেই দরকার সেই প্রতিষ্ঠানের মানুষগুলোর নিজেদের মধ্যে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি করা, এবং বজায় রাখা। সেটি দেখার দায়িত্বে থাকে এইচআর টিম। এই হিউম্যান রিসোর্স অন্যতম জরুরি এক খাত আউটসোর্স করার জন্য। 

আউটসোর্সিং এর এই ইন্ডাস্ট্রি কি আগামীতে টিকে থাকবে? এর উত্তর আলবৎ হ্যাঁ! কারণ, এতে উভয় পক্ষই সাধারণের চেয়ে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। একদিকে ইন্ডাস্ট্রি লেভেলে কর্পোরেট হাবগুলো তাদের কাজের জন্য দক্ষ, যোগ্য মানুষ হায়ার করতে পারছে, অপরদিকে বিশেষায়িত স্কিলসম্পন্ন ব্যক্তিও সহজেই তার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পেয়ে যাচ্ছে।

আউটসোর্সারের সময় বাঁচছে, খরচ কমছে, আর সে নিখুঁত কাজ পাচ্ছে। আর এদিকে ফ্র্যিল্যান্সার ঘরের কোণে কিম্বা গ্রামের বাড়ির পুকুরপাড়ে বসেই তার কাজের মাধ্যমে সম্মানজনক স্যালারির জব করতে পারছে। দুই পক্ষ লাভবান হবার পাশাপাশি অনেক রিসোর্স ও বেঁচে যাচ্ছে। 

সব বিবেচনা করে অভিজ্ঞদের মতামত, আউটসোর্সিং এর ভালো দিকগুলোর কারণে দিনদিন আরো বেশি প্রচলিত হতে থাকবে।

দুনিয়া বদলে যাচ্ছে, গতানুগতিক শিক্ষার পরিপূরক অনলাইন শিক্ষা এখন জনপ্রিয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে অতিমারি পরবর্তী পৃথিবীর জন্য যা আরও বেশি করে প্রযোজ্য। ডিস্টেন্স লার্নিং এর দিকে ঝুঁকছে তরুণরা। আউটসোর্সিং-ও কিন্তু এভাবেই শিখে ফেলা যাবে চাইলেই। এরকম কিছু সাইটের নাম চাইলেই বলে দেয়া যায়, আউটসোর্স স্কুল, ইউডেমি, স্কিল শেয়ার, কোর্সেরা, লিঙ্কডইন লার্নিং এমনই কিছু মাধ্যম। আউটসোর্স স্কুলকে বলা হয় এই জগতের সেরা শিক্ষণীয় জায়গা, এখানে ইউজারদের মধ্যে আছে অ্যামাজন সেলার, এজেন্সি, কোচ, স্পিকার, ইনফ্লুয়েন্সার থেকে শুরু করে সবাই। 

ইউডেমিতেও সহজেই আউটসোর্সিং শেখার ম্যাটেরিয়াল পাওয়া সম্ভব, সাইটটির বর্তমান ইউজার ৩.৫ কোটি ছাড়িয়েছে এবং ৫৭,০০০ এর বেশি ইনস্ট্রাক্টর যুক্ত আছেন তাদের সাথে। নব্য শিক্ষানবিশ কিংবা প্রফেশনাল যে কারও জন্যই বেশ উপযোগী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে স্কিলশেয়ারও। আর কোর্সেরাতে তো পার্টনার রয়েছে ২০০ এর অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ই। লিঙ্কডইনের নতুন উদ্যোগ লিঙ্কডইন লার্নিং-ও হয়ে উঠতে পারে পাথেয়।

যেহেতু এতদূর পড়ে ফেলেছো, ধরেই নিচ্ছি তোমার আগ্রহ আছে। এর সাথে অধ্যবসায় আর মনোযোগের মতো কিছু উপাদান যোগ করে নাও, সাফল্যের রেসিপি তোমার হবেই। আউটসোর্সিং এর সীমাহীন সম্ভাবনাময় দুনিয়ায় তোমাকে স্বাগতম। 

যেকোনো জিজ্ঞাসা কমেন্টে লিখতে দ্বিধা করোনা। সাধ্যমতো উত্তর দিতে আমি তো আছিই!

💻 শেখার সিঁড়ি’র লাইভ এডমিশন ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে সরাসরি চলে যেতে পারো এই লিঙ্কে: www.shekharsiri.com

✍️ শেখার সিঁড়ি ব্লগের জন্য কোনো লেখা পাঠাতে চাইলে, সরাসরি তোমার লেখাটি ই-মেইল কর এই ঠিকানায়: support@shekharsiri.com

📌 আমাদের সর্বশেষ পোস্টগুলোর তালিকা:

Scroll to Top